একটি বাড়ি বানানোর সময় বাড়িওয়ালা নিজে থাকার জন্য যে ফ্ল্যাট, ফ্লোর বা ইউনিট বাচাই করে নেন লক্ষ্য করলে দেখা যায় সেটি আলাদা যত্ন করে বানানো হয়। কেন!
বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে থাকা অন্যতম বৈষম্যের জায়গা হলো ঘরের সাজসজ্জা ও সুবিধা। বাড়িওয়ালারা সাধারণত নিজের বসবাসের জন্য ঘরটি সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলেন, কিন্তু ভাড়াটিয়াদের ঘরের ক্ষেত্রে এ ধরনের যত্ন অনেক সময় দেখা যায় না। যেমন, বাড়িওয়ালাদের নিজের ঘরের দরজা হয় চমৎকার নকশা করা, শক্তপোক্ত, এবং দৃষ্টিনন্দন। অন্যদিকে, ভাড়াটিয়াদের ঘরের দরজা অনেক সময় সাধারণ, নিম্নমানের বা ন্যূনতম সৌন্দর্যবোধহীন হয়, যা বাড়িওয়ালাদের ঘরের তুলনায় স্পষ্টতই কম গুরুত্ব পায়।
এ ধরনের বৈষম্য শুধু দরজা বা ঘরের সাজসজ্জায় নয়, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, বাড়িওয়ালার নিজের ঘরে উচ্চমানের ইলেকট্রিক সুইচ ইত্যাদি সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়, যেখানে ভাড়াটিয়াদের ঘরে সাধারণ বা নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, বাড়িওয়ালার ঘরের ফ্লোরিং থাকে মার্বেল বা টাইলস দিয়ে সুসজ্জিত, আর ভাড়াটিয়াদের ঘরগুলোতে অনেক সময় তুলনামূলক কম মানের মেঝে থাকে।
একইভাবে, বাথরুম ও রান্নাঘরের সুবিধাতেও বৈষম্য দেখা যায়। বাড়িওয়ালারা তাদের নিজের জন্য উন্নত মানের ফিটিংস এবং গিজার বা মডার্ন রান্নাঘরের ব্যবস্থা রাখেন, যেখানে ভাড়াটিয়াদের জন্য সাধারণ বা পুরনো ফিটিংস দেওয়া হয়, যা অনেক সময় অপর্যাপ্ত বা অপ্রতুল।
এছাড়াও, বাড়িওয়ালারা নিজেদের ঘরের রং এবং সাজসজ্জায় নিয়মিত পরিবর্তন করেন এবং যত্ন নিয়ে থাকেন, কিন্তু ভাড়াটিয়াদের ঘরগুলোতে সাধারণত পুরনো রং বা দীর্ঘদিন ধরে অপরিবর্তিত অবস্থা দেখা যায়।
এসব বৈষম্যের কারণে ভাড়াটিয়ারা অনেক সময় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন, কারণ তারা উচ্চমূল্যের ভাড়া পরিশোধ করলেও ঘরের মান ও সুবিধা মন মতো পান না।
এই ধরনের বৈষম্য কমানোর জন্য বাড়িওয়ালাদের উচিত সমানভাবে সব ঘরের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং ভাড়াটিয়াদেরকে যথাযথ সুবিধা দেওয়া। কারণ, একটি সুন্দর এবং সুবিধাজনক পরিবেশ ভাড়াটিয়াদের মানসিক ও শারীরিক স্বস্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।