প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় রোধঃ সকালের নাশতা দূরের কথা, ব্যাচেলররা সকালই দেখে না। বেশির ভাগ দিনে রান্না হয় এক বেলা। দুই বেলা রান্না হলেও সর্বোচ্চ দুই-তিন পদ রান্না হয়। ফলে প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাসের অপচয় হয় কম। অন্যদিকে ফ্যামিলি ভাড়া দিলে দিনে তিন বেলা রান্না ছাড়াও অবসরে শখের রান্নাবান্না তো চলেই। সকাল হলেই গোসল করতে হবে, ব্যাচেলরদের ক্ষেত্রে এই বাধ্যবাধকতা নেই। তাদের অনেকের কাছেই প্রতিদিন গোসল করা যা, তিন দিনে একবার গোসল করাও একই কথা। ফলে পানির অপচয় হবে না। আপনাকেও কষ্ট করে দিনে তিন বেলা পানির মোটর ছাড়ার ঝামেলায় যেতে হবে না।
বাসায় চুরি হওয়ার সম্ভাবনা কমঃ গেটে দারোয়ান বা নৈশপ্রহরীরা মাঝেমধ্যেই কাজে ফাঁকি দিয়ে ঘুমায়। ফলে চুরি, ডাকাতির ঝুঁকি থেকেই যায়। এদিক থেকে বাড়িতে ব্যাচেলর রাখলে আপনারই লাভ। যেহেতু ব্যাচেলররা প্রায়ই দেরি করে ফেরে, ফলে চাইলেও দারোয়ান বা নৈশপ্রহরীর কাজে ফাঁকি দেওয়ার উপায় নেই। তা ছাড়া ব্যাচেলররা রাত জেগে ফেসবুকিং বা ফোনে ব্যস্ত থাকে, ফলে বাসায় চোর-ডাকাত এলে তারা টের পাবেই।
অসুস্থতায় সেবা পাওয়ার সুযোগঃ বিপদ বলেকয়ে আসে না। গভীর রাতে কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁচা ঘুম ফেলে আশপাশের কেউ এগিয়ে আসবে কি না, এটা নিয়ে সন্দেহ থাকেই। তবে বাসায় যদি ব্যাচেলর রাখেন তাহলে আর এই সমস্যা নেই। ব্যাচেলরদের কাছে দিনও যে কথা, গভীর রাতও একই কথা।
হইচই-হাঙ্গামা কমঃ হইচই পছন্দ করেন না বলে নিজের টাকায় বাড়ি বানিয়ে নাম দিয়েছেন ‘নিরিবিলি’। অথচ প্রায়ই ভাড়াটিয়াদের কারও না কারও বাসায় আত্মীয়স্বজন আসে। ছুটির দিন অতিথি সমাগম হয় আরও বেশি। হইচই-হাঙ্গামাও হয় অনেক বেশি। অন্যদিকে ছুটির দিন মানে ব্যাচেলরদের সাপ্তাহিক ঘুমের দিন। আত্মীয়স্বজনের তো কোনো বালাই-ই নেই। স্বামী-স্ত্রী যেখানে, ঝগড়াঝাঁটি সেখানে। ফলে বাড়িওয়ালা হিসেবে প্রায়ই আপনাকে ভাড়াটিয়ার ঝগড়ার সাক্ষী হতে হয়। মাঝেমধ্যে আপনার কাছে বিচার আসাও বিচিত্র নয়। এদিকে প্রতিটি ব্যাচেলর ভাই ভাই বলে নিজেদের মধ্যে কখনো ঝগড়াঝাঁটি লাগে না। আর লাগলেও আপনি সেটা টের পাবেন না, এটা নিশ্চিত।
সম্মান পাওয়ার সম্ভাবনা বেশিঃ মহল্লার রাস্তাঘাটে দেখা হলে অন্য কেউ আপনাকে সালাম না দিলেও ব্যাচেলররা আঙ্কেল সম্বোধন করে, আশপাশের সবাইকে শুনিয়ে বেশ লম্বা একটা সালাম দেয়। যখন-তখন লম্বা সালাম পেলে এলাকায় অটোমেটিক আপনি একজন সম্মানীয় ব্যক্তি হয়ে উঠবেন।
আর্থিক সমস্যার সমাধানঃ ব্যাচেলররা মাসের শুরুতেই বাড়ি ভাড়া দিতে পারে না। এতে কিন্তু আপনারই লাভ। মাসের শুরুতে ভাড়ার টাকা খরচ হয়ে গেলেও চিন্তা নেই। মাসের শেষ কদিনের জন্য ব্যাচেলরদের ভাড়াটা তো আছেই।
দুনিয়াতে যেহেতু কেউ বিবাহিত হয়ে আসে না, তাই প্রত্যেকটি মানুষই জন্মসূত্রে ব্যাচেলর। বাড়িওয়ালা হয়ে যাওয়ার পর সেটা ভুলে যায় সবাই। খোলস বদলে ফেলার পর নিজের অস্তিত্ব ভুলে গেলে চলবে না। নিজে একসময়ের ব্যাচেলর হয়ে, পরবর্তীতে ব্যাচেলরদের ভয়ংকর প্রাণী মনে করার কিছু নেই। অতএব, ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দিন, ভাড়াটিয়া হিসেবে তারাই সেরা প্রমাণ নিন।