ফারাবি সদ্য ইন্টার পরীক্ষা দিয়েছে। ভালোই হয়েছে তার পরীক্ষা। বাবার স্বপ্ন ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে, মায়ের স্বপ্ন ডাক্তার। কিন্তু গণ্ডগোল বাধলো ফারবির ইচ্ছা নিয়ে, সে কাজ করতে চায় নাটক-সিনেমার জগতে। তার ভাষ্যমতে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার আজকাল সবাই হতে চায়। এটা রোবটিক জীবনযাপন। সে চায় আর্ট-কালচার নিয়ে থাকতে। তার প্রচণ্ড ইচ্ছা ক্যামেরার পিছনে কাজ করার। কীভাবে একটি নাটক বা সিনেমা তৈরি হয় তা নিয়ে তার যতো আগ্রহ।
বন্ধুরা সবাই যখন ভার্সিটি, মেডিকেল ভর্তির কোচিং নিয়ে ব্যস্ত তখন ফারারিব ক্ষেত্রে ঘটলো উল্টো ঘটনা। সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে! উদ্দেশ্য আপাতত ঢাকায় থাকা। ঢাকায় ফারাবির এক বন্ধুর মেসে গিয়ে উঠলো ফারাবি। পুরাতন একটি বিল্ডিং, স্যাঁতস্যাঁতে ফ্লোর, ময়লা আর গ্যাসের গন্ধ। রাতে ঘুমাতে গিয়ে বাধলো আরেক বিপত্তি, বিছানা যেন ছারপোকার আবাসস্থল।
পুরাতন বাড়ি, স্যাঁতস্যাঁতে ফ্লোর আর ছারপোকার কামড় নিয়েই ফারাবির পথচলা শুরু। দিন-সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে বছর ঘুরে ফারাবি একজন্য স্বনামধন্য পরিচালকের সহকারী পরিচালক। দিন বদলের সাথে বাসাও বদলেছে সে। বাসা ভাড়ার অনলাইন মাধ্যম THE TOLET এর কল্যাণে ভালো একটি বাসাও খুঁজে পেয়েছে। যেখানে ছারপোকার জন্য অন্তত ঘুমের সমস্যা হয় না তার।
ফরাবির কাজকর্মে তার বস তার প্রতি বেশ খুশি। মাঝে মাঝে নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখারও চেষ্টা করে ফারাবি। একদিন তার বস তাকে ডেকে বললো, “ফারাবি, তোর লেখা একটা স্ক্রিপ্টে কাজ করবো এবার, একটা স্ক্রিপ্ট রেডি কর”। বসের কথা শুনে যেন হাতে আকাশের চাঁদ পেল সে।
কয়েকদিন সময় নিয়ে নাটকের একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করলো ফারাবি। কিন্তু এই গল্পের নাম কি দেওয়া যায় ভেবে পাচ্ছে না। গল্পটি নিয়ে ফারাবি তার বসের কাছে যায়। তার বস গল্পটি পড়ে বুঝতে পারে গল্পটি হচ্ছে, ফারাবির নাট্য জগতে আসার জার্নি নিয়ে। কীভাবে সে বাড়ি ছেড়ে শহরে পাড়ি জমালো, কীভাবে বন্ধুর সেই ছারপোকাময় বাসা ছেড়ে ভালো বাসায় থাকা শুরু এইগুলো নিয়েই। গল্পটি এক বসায় পড়ে শেষ করে, ফারাবিকে ডেকে নিয়ে তার বস বললো এই গল্পের সুন্দর একটি নাম দেওয়া যায় “ভালো বাসায় ভালো ঘুম”।